বেহেস্তের মধ্যে ভালোবাসা।

আসসালামুয়ালাইকুম সবাই কেমন আছে। আমি আশাবাদী আপনার সকলে ভালো আছেন।  



বেহেশতীদের পারস্পরিক ভালবাসা

কোরআন মাজিদের সূরা-হুজরাতে আল্লাহ তাআলা বলেন : আমি

বেহেশতীদের অন্তর হতে. (পার্থিব জীবনের) হিংসা বিদ্বেষ দূর করে দেবো।

তখন তারা ভাই-ভাই হয়ে থাকবে. এবং সুসজ্জিত আসনে সামনা সামনি'আসন গ্রহণ করবে। ” (সূরা হিজর- ৪র্থ রুকু)

অর্থাৎ-  কোন কারণবশত  দুনিয়ার জীবনে যদি কারো প্রতি - কারোর ঘৃণা-বিদ্বেষ থেকে' থাকে'' তাহলে বেহেশতে প্রবেশের পূর্বেই - আমি তা তাঁর- অন্তর থেকে পৃথক করে ফেলব। ফলে সমস্ত বেহেশতীরা সেখানে পরস্পর ভাই - ভাইয়ের মত বসবাস করবে। কারো মনে তখন আর কোন

ঘৃণা-বিদ্বেষ ও দোষ থাকবে না ।

হযরত আবুসাঈদ খুদরী- (রা) বলেন- রাসূলুল্লাহ (সঃ)''বলেছেন-মুমিন-বান্দারা যখন পুলসিরাত পার হয়ে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ লাভ করবেন,

তখন বেহেশতে ও জাহান্নামের মাঝখানে  একটি পুলের  উপর তাদেরকে থামতে বলা হবে।  আর পার্থিব জীবনে একে অপরের প্রতি যে জুলুম অত্যাচার করেছিল, তার বিচার করে মজলুমের হক প্রদান করা হবে।

তাঁরা যখন 'জুলুম _অত্যাচার হতে সম্পূর্ণ পবিত্র হবে. তখনই তাদেরকে.বেহেশতে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে। অতএব, যার- নিয়ন্ত্রণে আমার

প্রাণ তার শপথ. তাদের প্রত্যেকেই. তখন বেহেশতের আপন আপন স্থানের

প্রতি. এমন স্বচ্ছন্দ গতিতে চলতে থাকবে. যেমন পার্থিব রাস্তা ঘাট সম্পর্কে তারা পরিজ্ঞাত ছিল । (বোখারী, মুসলিম শরীফ) 

বেহেস্তের মধ্যে  নহর ও নদ-নদী

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বর্ণনা করেছেন

মিরাজের রাতে আমাকে যখন আসমান ও জমীন পরিভ্রমণ করানো

হয়েছিল, তখন আমি বেহেশতের মধ্যে পানি, দুধ, শরাব ও মধু এ চারটি

স্রোতস্বিনী (নহর) দর্শন করেছিলাম। যেমন আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা

করেন—এর ভিতরে সঙ্গিহীন একটা পানির ঝর্ণা (নহর), পরিবর্তনহীন

সুস্বাদুময় একটি দুধের নহর, পানকারীগণের জন্য একটি দুধের ঝর্ণা

(নহর) এবং পানকারীদের জন্য সু-স্বাদুময় শরাবের ঝর্ণা (নহর) ও বিশুদ্ধ

স্বাদযুক্ত একটি মধুর নহর বিদ্যমান থাকবে।

হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) অতঃপর হযরত জিব্রাঈল (আঃ) এর

নিকট এদের উৎপত্তি স্থান এবং পতিত স্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করায় তিনি

জবাবে বললেন—ঐ নহরসমূহ হাউজে কাওছারে গিয়ে পতিত হয়েছে কিন্তু

এর উৎপত্তি স্থান সম্পর্কে আমার জানা নেই ।

মহানবী (সাঃ) বর্ণনা করেন-আমি বিসমিল্লাহ্ পড়ার সাথে সাথে

তালাটি খুলে গেল। আমি এর ভিতর প্রবেশ করতঃ দেখতে পেলাম একটি

গম্বুজের চার কোণা হতে চারটি ঝর্ণা (নহর) নির্গত হচ্ছে। আমি ওখান

হতে প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা করলে, ফেরেশতা আমাকে বললেন- আপনি

নহরসমূহের উৎপত্তি স্থান উত্তমরূপে দর্শন করেছেন কি? আমি উত্তর দিলাম

হ্যাঁ! ফিরেশতা আমাকে উহা পুনরায় ভালভাবে দেখতে বললেন

এ সময় আমি উত্তমরূপে খেয়াল করে দর্শন করলাম যে, এর চার

কোণায়ই 'বিসমিল্লাহ' লেখা রয়েছে। আমি আরশের প্রতি লক্ষ করে

দেখতে পেলাম যে, বিস্‌মিল্লাহ ‘মীম’ হতে পানির ঝর্ণা (নহর), আল্লাহর হা হতে দুধের ঝর্ণা (নহর), এবং ‘রাহমান' এর 'মীম' হতে হচ্ছে শরাবের

নহর, আর ‘রাহীম' এর ‘মীম’ হতে মধুর ঝর্ণা (নহর) প্রবাহিত হচ্ছে।

তখন আমি হৃদয়াঙ্গম করতে পারলাম যে, উক্ত নহর চারটি ‘বিসমিল্লাহ্'

হতে উৎপন্ন হয়েছে ।

বেহেশতে নয়নাভিরাম নহর ও ঝরণাধারা কুলকুল রবে প্রবাহমান

থাকবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআ'লা বলেন-“মোত্তাকীদের কাছে যে

বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার প্রকৃতি এমন হবে যে, তাতে

এমন সব নহর প্রবাহিত থাকবে, যার পানি কখনো পরিবর্তন হবে না। আর

বহু নহর থাকবে দুধের, যার স্বাদ ও মজা কখনো সামান্য পরিমানেও

পরিবর্তন হবে না। আর বহু নহর রয়েছে শরাবের; যা হবে পানকারীদের

জন্য খুব স্বাদ ও তৃপ্তিদায়ক। আর বহু নহর হবে মধুর; যা হবে সম্পূর্ণ

নির্মল-বিশুদ্ধ । সেখানে তাদের জন্য থাকবে সর্বপ্রকার ফলফলারি, আর

তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাদের জন্য মাগফিরাত।”

-

(সূরা মুহাম্মদ – ২য় রুকু)

হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,

বেহেশতে একশ'টি দরজা রয়েছে। প্রত্যেক দু'দরজার মধ্যবর্তী দূরত্ব

হচ্ছে- আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান। ফেরদাউস হচ্ছে

সবচেয়ে উত্তম বেহেশত। এখান থেকে বেহেশতের চারটি নহর প্রবাহিত

হবে। আর এর উপরেই হচ্ছে আল্লাহ তাআ'লার আরশ। সুতরাং তোমরা

আল্লাহ তাআ'লার কাছে বেহেশতের প্রার্থনা করলে ফেরদাউসই প্রার্থনা

করবে। (তিরমিযী, মেশকাত শরীফ)

পোষ্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. ভালো উপস্থাপনা এগিয়ে যান আমরা আছি তোমার পাশে ন

    উত্তরমুছুন

Cookies Consent

This website uses cookies to offer you a better Browsing Experience. By using our website, You agree to the use of Cookies

Learn More